এক.
একুশে ফেব্রুয়ারির এক সুন্দর সকাল। মাত্র আড়মোড়া দিয়ে সূর্যদেবের ঘুম ভেঙ্গেছে। পাখিরা এ ডাল থেকে ও ডালে উঁকিঝুঁকি মারছে। এমন সময় ঘুম থেকে জেগে ওঠলো খন্দকার আযহা সুলতান। হাত-মুখ ধুয়ে চুলের পরিচর্যা করলো কিছুক্ষণ। চুলগুলো ঠিকমতো নিড়ানি দিলো সে।
আযহা সুলতানের চুলগুলো বেশ লম্বা ও সুন্দর। চুলগুলো পরিচর্যা করে আর সে মনে মনে হাসে। এই চুলগুলোর জন্যেই অনেক মেয়ে তার প্রেমে পড়ে প্রায় মরতে বসেছিলো! চুলগুলো আজ তার এক বিরাট সম্পদ যেনো।
ঘর থেকে বের হল সে। তার উদ্দেশ্য, প্রভাত ফেরিতে বন্ধুদের সাথে মিলিত হবে। তারপর ভাষা আন্দোলনের শহীদদের ফুল দিয়ে গভীর শ্রদ্ধা জানাতে যাবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।
সে রাস্তায় হাটে আর মনে মনে ভাবতে থাকে, আজ আমরা অনেকেই আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ভুলে যেতে বসেছি। কারণ আমরা একুশের তাৎপর্য বুঝি না, একুশ নিয়ে কেউ কেউ ব্যঙ্গ্যোক্তিও করছি। একাত্তরকে পাক-ভারত গৃহযুদ্ধ বলেও আখ্যায়িত করছি আমাদের হৃদয়ে দেশপ্রেম-হীনতার কারণে। এসব লোকেরা দেশপ্রেম বলতে কী বুঝায়, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কী, মাতৃভাষা মর্যাদা কীভাবে দেয়া যায় তারা বুঝে না, বুঝতেও চায় না। তাদেরকে কে বুঝাবে, আমাদের নিজের দেশ, জাতি ও ভাষাকে সত্যিকারভাবে চিনতে হবে, জানতে হবে ও জানাতে হবে ...।
তার ভাবনায় ছেদ পড়ে। কে যেনো পেছন থেকে ডাক দেয়, ‘এই আযহা ভাই!’
আযহা সুলতান ঘাড় ফিরিয়ে দেখে সোহানাকে। তার কলেজ বান্ধবী সোহানা, একই সাথে পড়ালেখা করছে তারা। সোহানা খুব ভালো মেয়ে, বুদ্ধিমতীও বেশ।
সোহানা বললো, ‘কোথায় যাচ্ছো আযহা ভাই?’
‘যাচ্ছি প্রভাত ফেরিতে। তুমি যাবে নাকি?’
‘হ্যাঁ, আমি যাবো। সে জন্যেই তো রাস্তায় বেরিয়েছি।’
‘চলো এক সাথেই যাই।’
ওরা দু’জন পাশাপাশি হাঁটছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাছাকাছি রাস্তায়। আযহা সুলতান সোহানাকে প্রশ্ন করলো, ‘সোহানা, তোমাকে একটি কথা জিজ্ঞেস করি। জবাব দেবে?’
‘বলেন আযহা ভাই।’ আযহা ভাই সোহানার বয়সে দু’বছরের বড়। সোহানা তাই তাকে ভাই বলেই ডাকে।
‘তুমি কি একুশের সঠিক ইতিহাস জানো?’
‘জানি কিছুটা।’ আযহার চোখের পানে তাকিয়ে উত্তর দিলো সোহানা। তারপর বলতে লাগলো, ‘ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতির ইতিহাসের মাইলফলক। এই মাইলফলককে যারা হীরক রাজার মূর্তির মতো ভেঙ্গে ফেলতে চায়, তারা দেশের শত্রু। বাংলা ভাষার জন্যে বাঙালি রক্ত দিয়েছিলো বায়ান্ন সালের একুশে ফেব্রুয়ারি অপরাহ্ণে। রঞ্জিত হয়েছিলো সেদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ তদানীন্তন ছাত্রাবাস প্রাঙ্গণ। রক্ত দিয়েছিলো বাইশে ফেব্রুয়ারি পুরাতন হাইকোর্ট ও কার্জন হলের মধ্যবর্তী রাস্তায়, নবাবপুর রোডে, বংশাল আর রথখোলা মোড়ে। একুশ তারিখ শহীদ হল আবুল বরকত, রফিকউদ্দিন আহমেদ, আব্দুল জব্বার, সালাউদ্দিন ও নাম না জানা কিশোর। বাইশে শহীদ হল শফিউর রহমান, রিকশাচালক আউয়াল এবং নাম না জানা আরও কয়েকজন। সেই নিহতদের কবর দেয়া হয়েছিলো গোপনে, রাতের অন্ধকারে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে। এই ভাষা শহীদদের স্মৃতিকে অমর করে রাখার জন্যে গড়ে ওঠলো এক প্রতীক- শহীদ মিনার। শহীদ মিনার ভাষা সৈনিকদের কুতুব মিনার। এই মিনারকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠেছে আমাদের স্বাধিকারের ইতিহাস, স্বাধীনতার ইতিহাস; তা যেমন একদিকে তাৎপর্যপূর্ণ তেমনি বেদনারও।’ কথাগুলো বলতে বলতে সোহানার দু’চোখ অশ্রুতে ভরে গেলো।
‘একি, তুমি কাঁদছো সোহানা? শোনো, সবুজ সিদ্দীকীর খবর কী? ও আসবে না?’ প্রসঙ্গ পাল্টে ফেললো আযহা সুলতান।
‘ও আসবে কিছুক্ষণ পর।’ চোখের অশ্রুবিন্দু মুছতে মুছতে জবাব দিলো সোহানা।
দুই.
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যান্টিনে বসে বন্ধুদের সাথে চা পান করছিলো আযহা সুলতান। সেই সাথে চলছিলো জম্পেশ আড্ডা। আড্ডায় তার সাথে আরো উপস্থিত রয়েছে সোহানা, সবুজ সিদ্দিকী, সামছুল আলম সূর্য, বিষন্ন সুমন, তিথি, মৌসুমী, মনির খালজী, খোরশেদ, নীরব, হাসান ফেরদৌস, নাহিদ, শাওন সহ অনেকেই।
আজকের আড্ডার বিষয়- সবার প্রাণপ্রিয় বন্ধু সবুজ সিদ্দিকী। এবারের একুশের বইমেলায় সবুজ সিদ্দিকীর দু’টি বই বেরুচ্ছে। একটি কবিতার বই- ‘আশার আলো’। অন্যটি উপন্যাস- ‘নিরাশার অন্ধকার’।
আযহা সুলতান বন্ধু সবুজ সিদ্দিকীকে প্রশ্ন করলো, ‘দোস্ত তোমার বই দু’টির নাম পরস্পর বিরোধী। একটি আশার আলো, অন্যটি নিরাশার অন্ধকার, কেনো এমন নামকরণ করলে?’
‘মানুষের জীবনে যখন নিরাশার অন্ধকারে ছেয়ে যায়, তখন পথ দেখাবে আমার কবিতার বই, বাতলে দেবে কোথায় পাওয়া যাবে আশার আলো। তাই এমন নামকরণ।’ সোহানার পানে তাকিয়ে উত্তর মিটিমিটি হেসে জবাব দিলো সবুজ সিদ্দিকী।
ঠিক সেই মুহূর্তেই ভটভট করে একটি পুলিশের গাড়ি এসে থামলো কাছেই। গাড়ি থেকে নামলো একজন এস. আই. ও কয়েকজন কনস্টেবল। তারা এসে আযহা সুলতানদের কাছে দাঁড়ালো। তারপর আযহাকে উদ্দেশ্য করে এস. আই. প্রশ্ন করলো, ‘তাহলে তোমার নাম-ই তানভীর?’ পান চিবানো রসালো দাঁতগুলো বের করে মিটিমিটি হেসে বললো এস. আই. ইব্রাহিম।
‘জ্বি-না, আমার নাম খন্দকার আযহা সুলতান।’ উত্তর জানালো সে।
‘আরে ওই একই; আযহাও যা তানভীরও তা। তোমাকে অ্যারেস্ট করা হলো।’
‘আমার অপরাধ?’ জানতে চাইলো আযহা।
‘পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে অপরাধ প্রমাণ করতে হয় না। শুধু পুলিশে চাকুরি নিলেই হয়। তারপর ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যে কোনো মামলার পলাতক আসামী হিসেবে চালান করে দিলেই হয়। তাছাড়া তোমার নামের সাথে ভয়ংকর এক অপরাধীর নামের সাথে মিল আছে। হা হা হা।’
‘স্যার, এটা অন্যায়।’ পাশে দাঁড়ানো কনস্টেবল জাকির বললো।
‘আমাকে ন্যায়-অন্যায় শেখাচ্ছো?’ হাতের ডান্ডাটা কনস্টেবল জাকিরের থুতুনিতে লাগিয়ে মোচড় দিয়ে রহস্যময় কণ্ঠে প্রশ্ন করলো এসআই ইব্রাহিম।
‘এটা অন্যায় স্যার, সুনির্দিষ্ট কোনো অপরাধ অথবা সন্দেহজনক গতিবিধি প্রমাণিত হওয়া ছাড়া অযথা কাউকে গ্রেপ্তার করা ঠিক নয়।’
কষে একটা থাপ্পড় পড়ল কনস্টেবল জাকিরের গালে। ‘শালা বানচোত! আমাকে আইন শেখাচ্ছ, না? তুমি হলে একটা কনস্টেবল, আর আমি হচ্ছি একজন এস. আই.। জানো না বড় অফিসারদের কতো টাকা নজরানা দিয়ে আমাকে এই চাকুরিটা নিতে হয়েছে? প্রায় ৫ লাখ টাকার মতো? আর তুমি কি-না এইট পাস করে বিনা অর্থ খরচে লাইনে দাঁড়িয়ে চাকুরি পেয়ে আমাকে নীতিবাক্য শেখাচ্ছ!’
জীবনে এই প্রথম কারো কাছ থেকে চরম আঘাত ও অপমান বোধ করলো জাকির। অবাক হয়ে সে দেখলো একজন ক্ষমতাবানের ক্ষমতার দম্ভ। দেখলো ক্ষমতা একজন মানুষকে কীভাবে পশু বানিয়ে দেয়, হিতাহিত জ্ঞানশূন্য করে।
জাকির বি. এ. পাস করে বেকারত্বের জ্বালায় জ্বলে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে বিনাঘুষে এই চাকুরিটা পেয়ে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছে। চাকুরি জীবনে অসততা, নীতিবিরোধী কোনো কাজ করেনি। অথচ আজ তাকে এভাবেই অপমান, অপদস্ত হতে হলো তার একজন সিনিয়রের কাছে।
‘এই তোমরা কী করছো? ছেলেটাকে হ্যান্ডকাপ লাগাও!’ কনস্টবলদের উদ্দেশ্যে হাঁক ছাড়লো এসআই ইব্রাহিম।
তিন.
গভীর রাত। চোখে ঘুম আসছে না কনস্টেবল জাকিরের। এসআই ইব্রাহীম আযহা সুলতান নামের ছেলেটাকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে থানায় এনে ওর বাবাকে খবর দিয়ে বলা হয়েছে, ‘আপনার ছেলে জঙ্গীবাদের প্রধান হোতা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এক লাখ টাকা ম্যানেজ করে না দিলে ওকে চালান করে পরদিন কোর্টে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে।’
না! এর একটা বিহীত করতেই হবে। সেই সাথে নিতে হবে অপমান-অপদস্তের চরম প্রতিশোধ। যারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করে না। বিভিন্ন ছলচাতুরি করে মানুষকে বিপদে ফেলে, মানুষকে কষ্ট দিয়ে টাকা কামানোর ধান্ধায় মশগুল থাকে, তাদেরকে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা না করলে মানবতা বলে পৃথিবীতে কিছুই থাকবে না।
শয্যা ত্যাগ করলো কনস্টেবল জাকির। রুমের বাইরে এসে টেলিফোন বুথে ঢুকলো সে। তারপর ফোন করলো।
‘কে বলছেন?’
‘র্যাব অফিস?’
‘জ্বি।’
প্রয়োজনীয় কথাবার্তা শেষ করলো সে।
র্যাবের পরামর্শ অনুযায়ী আযহা সুলতানের বাবা একলাখ টাকা নিয়ে এস. আই. ইব্রাহিমের সাথে দেখা করলো। খুব খুশিমনে যখন ইব্রাহিম টাকাগুলো আযহা সুলতানের বাবার হাত থেকে গ্রহণ করলো, ঠিক সেই মুহূর্তেই ওঁৎ পেতে থাকা র্যাবের দলটি ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করলো এস. আই. ইব্রাহিমকে। তাকে এ্যারেস্ট করে নিয়ে যাবার সময় দেখা হলো কনস্টেবল জাকিরের সাথে।
‘কোথায় যাচ্ছেন স্যার?’ একটা লম্বা স্যালুট করলো জাকির। ‘আপনাকে উপদেশ দিতে গিয়ে একটি থাপ্পড় খেয়েছি, দয়া করে যদি অন্য গালে আরেকটি থাপ্পড় দিতেন তাহালে বড়ই উপকৃত হতাম...।’
কী বলবে বুঝতে পারছে না এসআই ইব্রাহীম। শুধু মনে মনে বললো, ‘শালা! হাতি খাদে পড়লে চামচিকাও রসিকতা করতে ভুলে না।’ জাকিরের দিকে কতোকক্ষণ কটমট করে তাকিয়ে থাকলো ইব্রাহীম। কোনো কথাই বের হলো না তার মুখ দিয়ে।
র্যাবের সদস্যরা নিয়ে গেলো তাকে।
চার.
সেদিনই থানা থেকে ছাড়া পেলো আযহা সুলতান। থানা থেকে বের হয়ে ভাবতে লাগলো কনস্টেবল জাকিরের কথা। এই লোকটি তার নিরাশার অন্ধকার জীবনে আশার আলো জুগিয়েছে। যদি লোকটির মধ্যে মানবতা না থাকতো, তাহলে মিথ্যা অপরাধে তার জীবনটা অন্ধকারে মিলিয়ে যেতে পারতো। সাময়িকভাবে থেমে যেতে পারতো তার শিক্ষাজীবন।
সোহানা, সবুজ সিদ্দিকী সহ অন্য বন্ধুদের সাথে নিয়ে দু’দিন পর কনস্টেবল জাকিরকে খুঁজে বের করলো সে। তাকে প্রশ্ন করলো, ‘আপনি একজন পুলিশের লোক হয়েও আমাকে বাঁচাতে গিয়ে এভাবে আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ফাঁসিয়ে দিলেন কেনো? লোকটার তো চাকুরি চলে যাবে।’
কনস্টেবল জাকির আযহা সুলতানের সব বন্ধুর পানে এক এক করে তাকালো। তারপর বললো, “তোমাদের মতোও আমি একদিন ছাত্র ছিলাম। তোমাদের মতো সুখ-দুঃখ আনন্দ ভাগাভাগি করে একসাথে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডায় মেতে ওঠতাম। তোমাদের দেখে আমার সেই বন্ধুদের কথা মনে পড়েছিলো। তাছাড়া যেদিন তোমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেদিন ছিলো বাংলা ভাষাকে রক্ষার জন্যে, মায়ের ভাষার আত্মমর্যাদা ফিরে পাবার জন্যে বাংলার দামাল ছেলেদের জীবন আত্মবিসর্জনের দিন। ওই একটি পবিত্র দিনে আমি আমার একজন ঊর্ধ্বতন অফিসারের অন্যায় আচরণ ও কার্যকলাপ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না। আমার মনের মাঝে যেনো সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করছিলো। আর উচ্চস্তরে বলছিলো, ‘হে বাংলার নির্ভীক সৈনিক! আজকের এই পবিত্র দিনে দেশমাতার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করো না। একটি অন্যায়কে মেনে নিতে গিয়ে আরেকটি অন্যায়কে প্রশ্রয় দিও না। তুমি প্রতিবাদ করো। তুমি সত্যের পথে পতাকা উড়াও। আমরা তো একটি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিজেদের বুকের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত করেছি। মায়ের বুক খালি করেছি। পৃথিবীর সমস্ত— আদর-ভালোবাসা-স্নেহ-মমতা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। তুমিও জেগে ওঠো। জেগে ওঠো।’ আমি আর স্থির থাকতে পারিনি। আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি। ভাষা শহীদদের অমর চেতনায় নিজেকে উজ্জীবিত করেছি। আমার যদি চাকুরিও চলে যেতো, তাহলেও আমি এ অন্যায় মেনে নিতাম না।’ কথাগুলো কনস্টেবল জাকির বলছিলো যখন, তখন তার চোখ-মুখ থেকে যেনো আগুনের ফুলকি ঠিকরে বেরিয়ে আসছিলো।
অবাক হয়ে আযহা সুলতান ও তার বন্ধুরা হৃদয়ে একুশের চেতনাবাহী একজন দেশপ্রেমিকের কথা শুনছিলো। তার কথা শেষ হতেই তাদের চোখে জমা হয়ে গেলো অশ্রæবিন্দু। একুশের অমর চেতনা ও দেশপ্রেমের আভায় ভরে গেলো তাদের অন্তর।
আযহা সুলতান বললো, ‘আপনার কাছ থেকে মহান একুশের চেতনা ও সত্যিকার দেশপ্রেমে মতো শেখার অনেক কিছুই আছে। আপনাকে শ্রদ্ধা জানাই হে বাংলার সূর্যসৈনিক। চিরদিন আমরা আপনার এ ত্যাগ ¯^ীকার ও মহিমার কথা স্মরণ রাখবো। আপনাকে হাজার সালাম।’
সবাইকে বুকে জড়িয়ে নিলো কনস্টেবল জাকির। সে বললো, ‘তোমরাও বাংলার সূর্যসন্তান। তোমাদের পরে তাকিয়ে আছে অমর একুশের ভাষা শহীদরা এবং একাত্তরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা। তোমরাই তাদের ¯^প্নকে বাস্তবায়িত করবে তোমাদের কর্মের দ্বারা। জয় হোক তোমাদের, জয় হোক এদেশের শান্তিকামী প্রতিটি মানুষের।’
সোহানার চোখে অশ্রæ। সবুজ সিদ্দিকী অপলক তাকিয়ে আছে সোহানার পানে। সে ভাবছে, একেই বলে দেশপ্রেম, একেই বলে একুশের চেতনার সুমহান বাণী। যে চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে এদেশের মানুষ আজও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে মৃত্যুকে সহজেই আলিঙ্গন করে নেয়।
এমন সময় দূরে কোথাও বেজে ওঠলো সেই চির অমর সংগীত-
“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি?.....’
(কাল্পনিক)